Wellcome to National Portal
টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) বিদ্যুৎ বিভাগ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৩rd অক্টোবর ২০২৪

জ্বালানি নিরীক্ষা

জ্বালানি দক্ষতা ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্বালানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য স্রেডা ২০১৬ সালে Energy Efficiency & Conservation Master Plan up to 2030 প্রণয়ন করে। এই মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী উৎপাদন, সরবরাহ ও ব্যবহারিক পর্যায়ে জ্বালানি সাশ্রয়ী দক্ষ যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ব্যবহার এবং জ্বালানি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপ প্রতি প্রাথমিক জ্বালানির ব্যবহার শতকরা ২০ ভাগ সাশ্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৭৮,০০০ মিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস সমতুল্য জ্বালানি সাশ্রয় হবে যা এলএনজি সহ অন্যান্য জ্বালানি আমদানিতে সরকারের ব্যয় কমাবে। স্রেডা কর্তৃক প্রতিবছর প্রকাশিত National Energy Balance (2021-22) পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে,  দেশে আবাসিক, শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে যথাক্রমে প্রাথমিক জালানির প্রায় ৩৫%, ৪০% ও ৬% ব্যবহৃত হয়। প্রণীত মাস্টার প্ল্যানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বৃহৎ ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানসমূহে জ্বালানি সাশ্রয় নিশ্চিতকরণ অত্যন্ত জরুরি।

 

বাংলাদেশে শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে জ্বালানি দক্ষতা ও সাশ্রয় নিশ্চিতকরণের জন্য স্রেডা কর্তৃক জ্বালানি দক্ষতা ও সংরক্ষণ বিধিমালা-২০১৬ প্রণীত হয় এবং পরবর্তীতে ২০২৩ সালে তা হালনাগাদ করা হয়। ২০১৮ সালে স্রেডা কর্তৃক জ্বালানি নিরীক্ষা প্রবিধানমালা প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত প্রবিধানমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয় এবং নতুন ভাবে ‘জ্বালানি নিরীক্ষা প্রবিধানমালা, ২০২৩’ প্রণয়ন করা হয়। উক্ত বিধি এবং প্রবিধানমালা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বৃহৎ ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে Designated Consumer (মনোনীত ভোক্তা) হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিষ্ঠানসমূহে জ্বালানি দক্ষতা ও সাশ্রয় নিশ্চিত করার জন্য স্রেডা বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।  এ পর্যন্ত ১৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে Designated Consumer (মনোনীত ভোক্তা) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।  সরকারের এ কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে স্রেডা কর্তৃক বেশকিছু শিল্প কলকারখানা ও বাণিজ্যিক স্থাপনায় জ্বালানি নিরীক্ষা (Energy Audit) সম্পাদন করা হয়েছে। এছাড়াও সেক্টর ভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহারের বেঞ্চমার্ক নির্ধারনের কাজও চলমান রয়েছে।

 

জ্বালানি দক্ষতা ও সাশ্রয়ের ক্ষেত্র সমূহ চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে স্রেডা প্রতি বছর জ্বালানি নিরীক্ষক সনদ পরীক্ষা পরিচালনার মাধ্যমে জ্বালানি নিরীক্ষক এবং জ্বালানির বৃহৎ ব্যবহারকারী শিল্প-কল্ কারখানা সমূহে জ্বালানি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কার্যক্রম সমূহ দেখভালের জন্য প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ পরবর্তী মূল্যায়নের মাধ্যমে জ্বালানি ব্যবস্থাপক তৈরি করে থাকে। এ সংক্রান্ত পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য ইতোমধ্যে সিলেবাস ও কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে।

 

জ্বালানি ব্যবস্থাপনা ও জ্বালানি নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্বন্ধে সচেতনতা ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্রেডা কর্তৃক নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সেমিনার, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্রেডা নিজ উদ্যোগে ও বিভিন্ন সহযোগী সংস্থার সহযোগিতায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা এবং শিল্প কল-কারখানায় জ্বালানি নিরীক্ষা পরিচালনা করছে এবং জ্বালানি নিরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তসমূহ বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে জনসাধারণের নিকট উপস্থাপন করছে।  

 

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারকারী স্থাপনায় জ্বালানি দক্ষতা ও সাশ্রয়ের ক্ষেত্র সমূহ চিহ্নিতকরণের অন্যতম প্রদান একটি হাতিয়ার হচ্ছে জ্বালানি নিরীক্ষা। বস্তুত জ্বালানি নিরীক্ষায় প্রাপ্ত সুপারিশ সমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই স্থাপনা সমূহে প্রকৃত জ্বালানি দক্ষতার উন্নয়ন ও জ্বালানি সাশ্রয় সম্ভব।